সারা মাস রোজার পর ঈদের দিন থেকে সকলে খাওয়া-দাওয়ার পুরনো রুটিনে ফিরে যাবেন। অর্থাৎ, সেহেরী-ইফতারের পর্ব বাদ যাবে এবং গতানুগতিক ধারায় তিনবে...
সারা মাস রোজার পর ঈদের দিন থেকে সকলে খাওয়া-দাওয়ার পুরনো রুটিনে ফিরে যাবেন। অর্থাৎ, সেহেরী-ইফতারের পর্ব বাদ যাবে এবং গতানুগতিক ধারায় তিনবেলা খাওয়ার পর্ব শুরু হবে। তবে সব খাবার সবার পেটে হজম হবে এমনটাও নয়। বিভিন্ন কারণে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। তখন অস্বস্তি থেকে নানা রকম সমস্যা হয়। আবার অনেক লুকায়িত অসুখ রয়েছে, যার জন্য খাবার হজম হয় না।
কারণ
খাবার সময় খুব দ্রুত খাওয়া। সঠিকভাবে চিবানোর অভাব, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদ, নিয়মিত রাত জেগে ডিউটি করা, সঠিক সময়ে খাওয়ার অভাব, খাবারে অতিরিক্ত তেল মসলা খাওয়া, তৈলাক্ত চর্বি জাতীয় খাবার বেশি খেলে এই ধরনের সমস্যা হয়। পাকস্থলীর কোনো অসুখ, খাদ্যনালির কোন গঠনগত ত্রুটি, মাত্রাতিরিক্ত এসিডিটির সমস্যা, অতিরিক্ত কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, দীর্ঘ সময় যাবৎ না খেয়ে থাকার পরে এক সঙ্গে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা, হঠাৎ করে খুব বেশি পরিমাণে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা, অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া, গভীর রাতে বা খুব ভোরে একসঙ্গে অনেক বেশি খাওয়া হলো খাবার সঠিকভাবে হজম না হওয়ার অন্যতম কারণ।
প্যানক্রিয়াস (Pancreas) নামের এক ধরনে অঙ্গ রয়েছে, যাতে ইনফেকশন হলে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। রক্তে চিনির মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হজম শক্তি দুর্বল হয়ে যায়।
বিভিন্ন রকম ওষুধ খেলেও হজম শক্তি কমে। বিশেষত যারা বয়স্ক বা নানা রকম অসুখে আক্রান্ত, হাঁটাচলা ঠিকভাবে করতে পারেন না, মানসিক রোগ বা কেমোথেরাপির ওষুধ খান, এই সমস্যাগুলোও হজমশক্তি দুর্বল হওয়ার জন্য দায়ী।
মাদকদ্রব্য, ধূমপান, অতিরিক্ত চা-কফি, পান, সুপারি, গুল, জর্দা প্রভৃতি হজমশক্তি দুর্বল করে।
দেহের কোথাও ক্যান্সার, খাদ্যনালি থেকে পাকস্থলী পর্যন্ত কোন গঠনগত ত্রুটি, খাবার হজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো অঙ্গ বা নালিতে ইনফেকশন বা কোন অসুখ, দীর্ঘ বছর ধরে খাবারে প্রচণ্ড অনিয়ম, হঠাৎ করে ওজন বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণ, কৃমির আক্রমণ, দীর্ঘ বছর ধরে বদহজমের সমস্যা, পানি খুব অল্প পরিমাণে খাবার অভ্যাস (২৪ ঘণ্টাতে ৩-৪ গ্লাস), খাবারে প্রচণ্ড পরিমাণে অনিয়ম।
গলব্লাডারে পাথর, কিডনীতে পাথর, খাদ্য নালির অপারেশনের পরে হজমে সমস্যা হতে পারে।
হজমের সমস্যা প্রতিকারে করণীয়
নিয়মিত দুই লিটার পানি পান করুন। তবে কিডনির সমস্যাতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শে পানি পান করুন।
অতিরিক্ত তেল, মসলা, চর্বি জাতীয় খাবার, অতিরিক্ত ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, পরিহার করুন। একবারে অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে ধীরে ধীরে ভালোভাবে চিবিয়ে খান।
মন থেকে ঝেড়ে ফেলুন হতাশা, কষ্ট, খাবার সময় মনোযোগ দিয়ে খান। হঠাৎ করে অতিরিক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণ ঠিক নয়। ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ কমান। আবার একবারে খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়।
অতিরিক্ত রাত জেগে কাজ করাটা পরিহার করুন। যতটা সম্ভব সঠিক সময়ে খাবার খান। বছরে অন্তত একবার পুরো পেটে Ultrasonography of whole abdomen টেস্ট করান। এতে লুকায়িত সমস্যা থাকলে ধরা পড়বে।
সব ধরনের মাদকদ্রব্য পরিহার করুন। ধূমপান থেকে বিরত থাকুন এবং খাবার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাবেন না। নিয়মিত হাঁটুন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
কোনো ওষুধ খাবার পরে হজমে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক: রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (গাইনি অ্যান্ড অবস), স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা
ই-মেইল: farhanamobin31@yahoo.com
কারণ
খাবার সময় খুব দ্রুত খাওয়া। সঠিকভাবে চিবানোর অভাব, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদ, নিয়মিত রাত জেগে ডিউটি করা, সঠিক সময়ে খাওয়ার অভাব, খাবারে অতিরিক্ত তেল মসলা খাওয়া, তৈলাক্ত চর্বি জাতীয় খাবার বেশি খেলে এই ধরনের সমস্যা হয়। পাকস্থলীর কোনো অসুখ, খাদ্যনালির কোন গঠনগত ত্রুটি, মাত্রাতিরিক্ত এসিডিটির সমস্যা, অতিরিক্ত কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, দীর্ঘ সময় যাবৎ না খেয়ে থাকার পরে এক সঙ্গে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা, হঠাৎ করে খুব বেশি পরিমাণে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা, অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া, গভীর রাতে বা খুব ভোরে একসঙ্গে অনেক বেশি খাওয়া হলো খাবার সঠিকভাবে হজম না হওয়ার অন্যতম কারণ।
প্যানক্রিয়াস (Pancreas) নামের এক ধরনে অঙ্গ রয়েছে, যাতে ইনফেকশন হলে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। রক্তে চিনির মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হজম শক্তি দুর্বল হয়ে যায়।
বিভিন্ন রকম ওষুধ খেলেও হজম শক্তি কমে। বিশেষত যারা বয়স্ক বা নানা রকম অসুখে আক্রান্ত, হাঁটাচলা ঠিকভাবে করতে পারেন না, মানসিক রোগ বা কেমোথেরাপির ওষুধ খান, এই সমস্যাগুলোও হজমশক্তি দুর্বল হওয়ার জন্য দায়ী।
মাদকদ্রব্য, ধূমপান, অতিরিক্ত চা-কফি, পান, সুপারি, গুল, জর্দা প্রভৃতি হজমশক্তি দুর্বল করে।
দেহের কোথাও ক্যান্সার, খাদ্যনালি থেকে পাকস্থলী পর্যন্ত কোন গঠনগত ত্রুটি, খাবার হজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো অঙ্গ বা নালিতে ইনফেকশন বা কোন অসুখ, দীর্ঘ বছর ধরে খাবারে প্রচণ্ড অনিয়ম, হঠাৎ করে ওজন বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণ, কৃমির আক্রমণ, দীর্ঘ বছর ধরে বদহজমের সমস্যা, পানি খুব অল্প পরিমাণে খাবার অভ্যাস (২৪ ঘণ্টাতে ৩-৪ গ্লাস), খাবারে প্রচণ্ড পরিমাণে অনিয়ম।
গলব্লাডারে পাথর, কিডনীতে পাথর, খাদ্য নালির অপারেশনের পরে হজমে সমস্যা হতে পারে।
হজমের সমস্যা প্রতিকারে করণীয়
নিয়মিত দুই লিটার পানি পান করুন। তবে কিডনির সমস্যাতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শে পানি পান করুন।
অতিরিক্ত তেল, মসলা, চর্বি জাতীয় খাবার, অতিরিক্ত ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, পরিহার করুন। একবারে অতিরিক্ত খাবার না খেয়ে ধীরে ধীরে ভালোভাবে চিবিয়ে খান।
মন থেকে ঝেড়ে ফেলুন হতাশা, কষ্ট, খাবার সময় মনোযোগ দিয়ে খান। হঠাৎ করে অতিরিক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণ ঠিক নয়। ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ কমান। আবার একবারে খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়।
অতিরিক্ত রাত জেগে কাজ করাটা পরিহার করুন। যতটা সম্ভব সঠিক সময়ে খাবার খান। বছরে অন্তত একবার পুরো পেটে Ultrasonography of whole abdomen টেস্ট করান। এতে লুকায়িত সমস্যা থাকলে ধরা পড়বে।
সব ধরনের মাদকদ্রব্য পরিহার করুন। ধূমপান থেকে বিরত থাকুন এবং খাবার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাবেন না। নিয়মিত হাঁটুন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
কোনো ওষুধ খাবার পরে হজমে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক: রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (গাইনি অ্যান্ড অবস), স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা
ই-মেইল: farhanamobin31@yahoo.com
COMMENTS