ল্যাপটপ আমাদের নিত্য দিনের সবচাইতে কাছের একটা জিনিস। সাধারণত মোবাইলের পরেই আমরা ল্যাপটপকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। তার কারণ এটি বহনযোগ্...
ল্যাপটপ আমাদের নিত্য দিনের সবচাইতে কাছের একটা জিনিস। সাধারণত মোবাইলের পরেই আমরা ল্যাপটপকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। তার কারণ এটি বহনযোগ্য এবং এর নিজস্ব চার্জ ব্যাকআপ দেওয়ার ক্ষমতা আছে। তাই কারেন্ট না থাকলেও এটি দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার সহ বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজ করা যায়। তবে এর একটা সমস্যা যা আমাদের বিভ্রান্ত করে থাকে তা হল: এর ব্যাটারি বেশি দিন ভাল ব্যাকআপ দিতে পারেনা। খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাইতো এবার এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে দিয়ে এক অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানের এক শিক্ষার্থী।
আবিষ্কারটি এমন যাতে ল্যাপটপের এমন ব্যাটারি বানানো সম্ভব যা ৪শ’ বছর পর্যন্ত টিকে থাকবে।
গুড ডট ইজ’র দ্বারা সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, আরভিনে (ইউসিআই) ঘটনাক্রমে এমন একটি অভিনব আবিষ্কার করেছেন ডক্টরেট ডিগ্রীর জনৈক শিক্ষার্থী মায়া লে থাই।
ইউসিআইয়ের একদল গবেষক ব্যাটারিতে ন্যানোওয়্যারের সম্ভাব্য ব্যবহার সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। তবে এতে দেখা যায় ভঙ্গুর ন্যানোওয়্যার একটি ব্যাটারি বেশ কয়েকবার চার্জ দেওয়ার পর ভেঙে পড়বে ও ফেটে যাবে। তবে মায়া লে থাই অনেকটা ঝোঁকের বশেই এক সেট সোনার ন্যানোওয়্যারের ওপর ম্যাঙ্গানিজ ডাই-অক্সাইড ও প্লেক্সিগ্যালসের মতো এক ইলেকট্রোলাইট জেলের আবরণ দিয়ে দেন।
ওই শিক্ষার্থী মায়া লে থাই এরপর ওই ন্যানোওয়্যার ব্যাটারিতে লাগিয়ে বারংবার চার্জ দিতে থাকেন। তারপর চার্জ খালি করে আবার চার্জ দেওয়া হয়। এভাবে এক হাজার বার চার্জ ও পুনঃচার্জ করার পরও ওই ন্যানোওয়্যারগুলো পুরোপুরি অক্ষত ছিল।
মায়া লে থাই জানান, ওই ব্যাটারিটি আমি ৩ হাজার বার চার্জ ও পুনঃচার্জ করার পরও এতে ব্যবহৃত স্বর্ণের ন্যানোওয়্যারগুলোর কোনো ক্ষতিই হয়নি!
সাধারণতভাবে একটি ল্যাপটপের ব্যাটারি গড়পড়তা ৩শ’ হতে ৫শ’ বার চার্জ পুনঃচার্জ পর্যন্ত টিকে থাকে। তবে ইউসিআইয়ে উদ্ভাবিত এই ন্যানোওয়্যার ব্যাটারি ৩ মাসে ২ লাখ বার চার্জ ও পুনঃচার্জ করার পরও টিকে থাকে। এতেকরে ল্যাপটপের ব্যাটারির গড়পড়তা বয়স ৪শ’ বছর পর্যন্ত বাড়াবে। নতুন এই আবিষ্কারটি তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিপ্লবী পরিবর্তন ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়টির রসায়ন বিভাগের প্রধান রেজিন্যাল্ড পেনার বলেছেন, ‘এই ঘটনাটি দেখে আমরা রীতিমতো অভিভূত। এই নতুন আবিষ্কারের বড় পরিসরের চিত্রটি হলো, হয়তো আমরা যে ধরনের ন্যানোওয়্যার নিয়ে গবেষণা চালিয়েছি সেগুলো স্থির রাখার কোনো একটি অতি সহজ উপায়ও রয়েছে। এটি যদি সাধারণভাবে সত্য বলেই প্রমাণিত করা সম্ভব হয়, তাহলে এর মাধ্যমে মানব সম্প্রদায়ের জন্য একটি বড় অগ্রগতি সাধিত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’
COMMENTS