ইথিওপিয়া ডানাকিল ডিপ্রেশন এমনি একটি উত্তপ্ত এবং শুষ্কতম জায়গা যা পৃথিবীর আর কোথাও নেই বললেই চলে। ইথিওপিয়ার আর একটি অঞ্চল যার নাম আফার। এট...
ইথিওপিয়া ডানাকিল ডিপ্রেশন এমনি একটি উত্তপ্ত এবং শুষ্কতম জায়গা যা পৃথিবীর আর কোথাও নেই বললেই চলে। ইথিওপিয়ার আর একটি অঞ্চল যার নাম আফার। এটি উত্তরপূর্ব ইথিওপিয়ার ইরিত্রিয়া সীমানার কাছে অবস্থিত। এখানকার জলবায়ুর বৈরীভাবের কথা বর্ণনার বাইরে। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, যেখানে সূর্যের দাপটে একবিন্দু টিকে থাকা সম্ভব না সেখানে বাস করে কিছু অদ্ভুত মানুষ। স্থানীয়দের কাছে যারা আফার জাতিগোষ্ঠী নামে পরিচিত।
আফাররা এটাই তাদের আবাসস্থল বলে মনে করেন। আফার পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তপ্ত স্থান। এখানকার তাপমাত্রা সবসময় ৩৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি। বৃষ্টির দেখা পাওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার। এখানে বছরে একবার বৃষ্টি হয়। যার মাত্রা সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়। এটা পৃথিবীর সবচেয়ে নি¤œতম স্থান হিসেবেও বলা হয়ে থাকে যা প্রায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪১০ ফুট নিচে অবস্থিত। সবকিছু মিলিয়ে এখানকার পরিবেশ মানুষ বসবাসের অনুপযোগী বলে বিবেচনা করা হয়।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, বহু বছর আগেও এখানকার জলবায়ু মানুষ বসবাসের জন্য অনুকূল ছিল না। ভৌগোলিক ও জলবায়ুর তারতম্যের কারণে অনেকের কাছে এই স্থানটি অ্যালিয়ান ল্যান্ড নামে পরিচিত ছিল। কারণ এত উত্তাপের মাঝে এখানে মানুষ বসবাস মোটেও সম্ভব ছিল না। এ স্থানটির চারপাশে ঘুরে বেড়ালে মনে হবে এটা যেন পৃথিবী নয় বরং অন্য কোন গ্রহ। এখানে যে লাভা লেকগুলো আছে তা সবসময় ফুটন্ত অবস্থায় থাকে এবং বিভিন্ন রঙের বিকিরণ সৃষ্টি করে।
আফার ট্রাইঅ্যাঙ্গেলের উত্তরাংশই হচ্ছে ডানাকিল ডিপ্রেশন। ভৌগোলিক দিক থেকে দেখলে দেখা যাবে, এখানে একটি ত্রিপল জংশন আছে যা তিনটি টেকটনিক প্লেটস নামে পরিচিত। ডিপ্রেশন সীমানা অতিক্রম করলেই ইরিত্রিয়া, দিবোউতি এবং সবশেষে ইথিওপিয়ার আফার এলাকা। আর এটা বৃহত্তর পশ্চিম আফ্রিকার রিফ্ট (ফাটল) উপত্যকারই একটি অংশ। রিফ্ট উপত্যকা এই টেকটোনিক প্লেটসকে দূরে সরিয়ে সেখানে নতুন ভূত্বক তৈরি করেছে। আর এই কারণেই এখানে প্রতিবছর এক থেকে দুই সেন্টিমিটার গভীরতার তিনটি ফাটল দেখা দেয়।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, লক্ষ্যবছর পড়ে এই প্লেটসগুলো দূরে সরে যাবে এবং লবণাক্ত পানির সৃষ্টি হবে যা লোহিত সাগরে ছড়িয়ে পড়বে। এই স্থানে একটি নতুন মহাসাগরের দৃশ্যপট হবে যা আগে কেউ কখনো দেখেনি। ডানাকিল ডিপ্রেশনই হবে ওই নতুন মহাসাগরের জš§স্থান। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় যে, ১৯৭৪ সালে ডোনাল্ড জনসন এবং তার সহকর্মীরা এই স্থানটি খুঁজে পায়। ধারণা করা হয়, এই স্থানটিতেই প্রথম প্রাণের জীবাশ্ম পাওয়া যায় সেই সঙ্গে এই স্থানটিকেই মানবতার শৈশবস্থানও বলা হয়ে থাকে।
এত বর্ণনার শোনার পর আপনি ভাবতেই পারেন এই জায়গা কোনোভাবেই মানুষ বা কোন প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য অসম্ভব। কিন্তু অসম্ভব হলেও সত্য আফার জাতি এখানে দিনের পর দিন বসবাস করে আসছে। যখন সূর্যের প্রখর তাপে বাইরে থেকে যাওয়া কারো প্রাণ ওষ্ঠাগত এমনকি পানির জন্য ছটফট করতে থাকে এমন পরিস্থিতিতে আফারদের দেখায় একদম শীতল ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। আর এটার একমাত্র কারণ তারা বহুদিন ধরে এখানে বসবাস করে আসছে। তাদের দেহ এমন বৈরী পরিবেশে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে। তাই প্রখর গরম হোক আর যাই হোক তারা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে এখানে থাকতে পারে।
আফার জনগোষ্ঠীর প্রধান জীবিকা নির্ভর করে লবণের ওপর। তাদের কাছে লবণ হলো টাকার মতো। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে লবণ সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে। আর এসব লবণ পরিবহনের জন্য তারা উট ও গাধা ব্যবহার করে। লবণ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করার জন্য তারা একসঙ্গে উটের পাল নিয়ে লবণ সংগ্রহ করতে রওয়ানা হয়। আর সঙ্গে নিয়ে নেয় এক সপ্তাহের জন্য রুটি ও পানি। তারা এই স্থানের যাযাবর গোষ্ঠী। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা জীবিকার সন্ধানে তারা ঘুরে বেড়ায়। সঙ্গে নেয়ার জন্য উট, গাধা, ছাগল ছাড়া আর কোনো সম্বলই তাদের নেই বললেই চলে।
এই এলাকায় একটি মাত্র নদী আছে যার নাম আওয়াশ। যার পানি খেয়েই তারা বেঁচে থাকে। আওয়াশ হলো পৃথিবীর সব নদীর মধ্যে অন্যতম। অন্যতম হওয়ার কারণ হলো এই নদীর পানি কখনোই সমুদ্রে গিয়ে মিলিত হয় না। এটি শুধু ইথিওপিয়ার উচ্চভূমিতে প্রবাহিত হয়ে ডানাকিল ডিপ্রেশনের লেকে গিয়ে শেষ হয়। যদিও ডিপ্রেশন একটি শুষ্ক ও অনুর্বর স্থান কিন্তু এই নদীটির জন্যই মূলত এখানে মানুষের বসবাস।
আফাররা এটাই তাদের আবাসস্থল বলে মনে করেন। আফার পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তপ্ত স্থান। এখানকার তাপমাত্রা সবসময় ৩৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি। বৃষ্টির দেখা পাওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার। এখানে বছরে একবার বৃষ্টি হয়। যার মাত্রা সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়। এটা পৃথিবীর সবচেয়ে নি¤œতম স্থান হিসেবেও বলা হয়ে থাকে যা প্রায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪১০ ফুট নিচে অবস্থিত। সবকিছু মিলিয়ে এখানকার পরিবেশ মানুষ বসবাসের অনুপযোগী বলে বিবেচনা করা হয়।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, বহু বছর আগেও এখানকার জলবায়ু মানুষ বসবাসের জন্য অনুকূল ছিল না। ভৌগোলিক ও জলবায়ুর তারতম্যের কারণে অনেকের কাছে এই স্থানটি অ্যালিয়ান ল্যান্ড নামে পরিচিত ছিল। কারণ এত উত্তাপের মাঝে এখানে মানুষ বসবাস মোটেও সম্ভব ছিল না। এ স্থানটির চারপাশে ঘুরে বেড়ালে মনে হবে এটা যেন পৃথিবী নয় বরং অন্য কোন গ্রহ। এখানে যে লাভা লেকগুলো আছে তা সবসময় ফুটন্ত অবস্থায় থাকে এবং বিভিন্ন রঙের বিকিরণ সৃষ্টি করে।
আফার ট্রাইঅ্যাঙ্গেলের উত্তরাংশই হচ্ছে ডানাকিল ডিপ্রেশন। ভৌগোলিক দিক থেকে দেখলে দেখা যাবে, এখানে একটি ত্রিপল জংশন আছে যা তিনটি টেকটনিক প্লেটস নামে পরিচিত। ডিপ্রেশন সীমানা অতিক্রম করলেই ইরিত্রিয়া, দিবোউতি এবং সবশেষে ইথিওপিয়ার আফার এলাকা। আর এটা বৃহত্তর পশ্চিম আফ্রিকার রিফ্ট (ফাটল) উপত্যকারই একটি অংশ। রিফ্ট উপত্যকা এই টেকটোনিক প্লেটসকে দূরে সরিয়ে সেখানে নতুন ভূত্বক তৈরি করেছে। আর এই কারণেই এখানে প্রতিবছর এক থেকে দুই সেন্টিমিটার গভীরতার তিনটি ফাটল দেখা দেয়।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, লক্ষ্যবছর পড়ে এই প্লেটসগুলো দূরে সরে যাবে এবং লবণাক্ত পানির সৃষ্টি হবে যা লোহিত সাগরে ছড়িয়ে পড়বে। এই স্থানে একটি নতুন মহাসাগরের দৃশ্যপট হবে যা আগে কেউ কখনো দেখেনি। ডানাকিল ডিপ্রেশনই হবে ওই নতুন মহাসাগরের জš§স্থান। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় যে, ১৯৭৪ সালে ডোনাল্ড জনসন এবং তার সহকর্মীরা এই স্থানটি খুঁজে পায়। ধারণা করা হয়, এই স্থানটিতেই প্রথম প্রাণের জীবাশ্ম পাওয়া যায় সেই সঙ্গে এই স্থানটিকেই মানবতার শৈশবস্থানও বলা হয়ে থাকে।
এত বর্ণনার শোনার পর আপনি ভাবতেই পারেন এই জায়গা কোনোভাবেই মানুষ বা কোন প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য অসম্ভব। কিন্তু অসম্ভব হলেও সত্য আফার জাতি এখানে দিনের পর দিন বসবাস করে আসছে। যখন সূর্যের প্রখর তাপে বাইরে থেকে যাওয়া কারো প্রাণ ওষ্ঠাগত এমনকি পানির জন্য ছটফট করতে থাকে এমন পরিস্থিতিতে আফারদের দেখায় একদম শীতল ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। আর এটার একমাত্র কারণ তারা বহুদিন ধরে এখানে বসবাস করে আসছে। তাদের দেহ এমন বৈরী পরিবেশে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে। তাই প্রখর গরম হোক আর যাই হোক তারা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে এখানে থাকতে পারে।
আফার জনগোষ্ঠীর প্রধান জীবিকা নির্ভর করে লবণের ওপর। তাদের কাছে লবণ হলো টাকার মতো। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে লবণ সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে। আর এসব লবণ পরিবহনের জন্য তারা উট ও গাধা ব্যবহার করে। লবণ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করার জন্য তারা একসঙ্গে উটের পাল নিয়ে লবণ সংগ্রহ করতে রওয়ানা হয়। আর সঙ্গে নিয়ে নেয় এক সপ্তাহের জন্য রুটি ও পানি। তারা এই স্থানের যাযাবর গোষ্ঠী। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা জীবিকার সন্ধানে তারা ঘুরে বেড়ায়। সঙ্গে নেয়ার জন্য উট, গাধা, ছাগল ছাড়া আর কোনো সম্বলই তাদের নেই বললেই চলে।
এই এলাকায় একটি মাত্র নদী আছে যার নাম আওয়াশ। যার পানি খেয়েই তারা বেঁচে থাকে। আওয়াশ হলো পৃথিবীর সব নদীর মধ্যে অন্যতম। অন্যতম হওয়ার কারণ হলো এই নদীর পানি কখনোই সমুদ্রে গিয়ে মিলিত হয় না। এটি শুধু ইথিওপিয়ার উচ্চভূমিতে প্রবাহিত হয়ে ডানাকিল ডিপ্রেশনের লেকে গিয়ে শেষ হয়। যদিও ডিপ্রেশন একটি শুষ্ক ও অনুর্বর স্থান কিন্তু এই নদীটির জন্যই মূলত এখানে মানুষের বসবাস।
COMMENTS