১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রায় মধ্যরাতে সাঁতার শুরু হয়। ইংলিশ চ্যানেল এমনিতেই অশান্ত থাকে, সেদিন বাড়তি সুবিধা ছিল কুয়াশা। ফ্রান্সের তীর থেকে স...
১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রায় মধ্যরাতে সাঁতার শুরু হয়। ইংলিশ চ্যানেল এমনিতেই অশান্ত থাকে, সেদিন বাড়তি সুবিধা ছিল কুয়াশা। ফ্রান্সের তীর থেকে সাঁতরে ইংল্যান্ডের তীরে এসে উঠতে হবে। প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছিল পরদিন বিকাল বেলায় এবং ব্রজেন দাশ প্রথম স্থান অধিকার করেন। বিখ্যাত এই সাঁতারু মারা যান ১৯৯৮ সালের ১ জুন। তাকে নিয়ে আজকের আয়োজনÑ
বিখ্যাত সাঁতারু ব্রজেন দাশের জš§ ১৯২৭ সালের ৯ ডিসেম্বর। তার বাবার নাম হরেন্দ্র কুমার দাস ও মা বিমলা দাস। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের পাঠশালাতেই শুরু। একটু বড় হয়ে গুরুজনদের সঙ্গে ঢাকা চলে আসেন এবং কেএল জুবিলি হাইস্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকেই ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাস করেন ১৯৪৬ সালে। পরে কলকাতায় গিয়ে বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে যথাসময়ে আইএ এবং বিএ পাস করেন। বিএ পাস করার পর ঢাকায় ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বটে, কিন্তু পরে ছেড়ে দেন।
বাল্যকাল থেকেই খেলাধুলার দিকে ঝোঁক ছিল। ফুটবল খেলা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতেন এবং স্কুল জীবনে সর্বদা স্কুল-ক্যাপ্টেন থেকেছেন। এরপর ভালো লাগতো ক্রিকেট। কিন্তু ছোটবেলায় সাঁতার কখনই তার কাছে খেলা মনে হয়নি। সাঁতার ছিল মজার বা আমাদের ব্যাপার। বুড়িগঙ্গা ছিল কাছেই। সাঁতারের আনন্দ ছিল একান্ত স্বাভাবিক। আন্তঃবিদ্যালয় খেলাধুলায় সাঁতার প্রতিযোগিতায় সবসময় প্রথম স্থান দখল করতেন। কলকাতায় কলেজ জীবনে সাঁতারের দিকে বিশেষ কারণে আগ্রহ জš§ায়, কারণ তার বাড়ির কাছাকাছি ফুটবল-ক্রিকেটাদি খেলার মাঠ ছিল না, অথচ সুইমিংপুল ছিল। সন্তরণক্রীড়ার বিজ্ঞান অর্থাৎ সাঁতারের বিভিন্ন কায়দা, নিয়মকানুন ইত্যাদি তিনি সেখানেই শেখেন। কলকাতায় ছাত্রাবস্থাতেই তিনি সাঁতারে প্রথম হতে শুরু করেন।
ঢাকায় ফিরে আসার পর এ দেশে সাঁতারের নিয়মিত অনুশীলন, বার্ষিক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি প্রধানত তারই উদ্যোগে শুরু হয় ১৯৫৩ সালে, কারণ ইস্ট পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশনকে তিনিই এ ব্যাপারে উৎসাহী ও উদ্যোগী করে তুলেছিলেন। ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান অলিম্পিকে সাঁতার প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম তো হনই, উপরন্তু সর্বমোট চারটি খেলায় উপর্যুপরি সাফল্যের কারণে স্বর্ণপদক লাভ করেন। অথচ পরের বছর ১৯৫৬ সালে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অলিম্পিকে তাকে পাঠানো হয়নি। এই অপমানজনক পরিস্থিতিই তাকে অলিম্পিকে অংশ না নিয়েও সমতুল্য সম্মান ও সাফল্য অর্জনের চিন্তায় বাধ্য করে এবং তিনি মনস্থ করেন, ইংলিশ চ্যানেল তাকে সাঁতরে অতিক্রম করতে হবেই। তাকে শক্তি জুগিয়েছিলেন ইস্ট পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম মোহসীন। অতঃপর কঠিন সাধনা শুরু হয় ১২, ১৬, ২৪, ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী একটানা সাঁতারের। নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুরে সাঁতরে যান ১৯৫৮ সালের মার্চে। কিন্তু ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম প্রতিযোগিতার আগেই ১৯৫৮-এর জুলাইয়ে আরেকটি সাঁতারের আমন্ত্রণ আসে। ইতালির কাপ্রি থেকে নেপলস পর্যন্ত সাঁতার কেটে যেতে হবে। এটি কোনো প্রতিযোগিতা ছিল না। ফলে লন্ডন থেকেই তিনি ইতালি গিয়ে ওই খেলায় অংশ নেন।
ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের সাঁতার প্রতিযোগিতায় মোট ২৩টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল। সাঁতারুদের মধ্যে মেয়েও ছিলেন পাঁচজন। ভারতবর্ষীয় উপমহাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিলেন একমাত্র ব্রজেন দাশ। তিনি ছিলেন ১৯নং প্রতিযোগী। ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রায় মধ্যরাতে সাঁতার শুরু হয়। ইংলিশ চ্যানেল এমনিতেই অশান্ত থাকে, সেদিন বাড়তি সুবিধা ছিল কুয়াশা। ফ্রান্সের তীর থেকে সাঁতরে ইংল্যান্ডের তীরে এসে উঠতে হবে। প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছিল পরদিন বিকাল বেলায় এবং ব্রজেন দাশ প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
১৯৬১ সালের সাঁতারে তিনি বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গ করেন। এর আগে ১০ ঘণ্টা ৫০ মিনিটের আগে কেউ চ্যানেল অতিক্রম করতে পারেননি, ব্রজেন দাশ করেছিলেন ১০ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটে। বিখ্যাত এই সাঁতারু মারা যান ১৯৯৮ সালের ১ জুন।
বিখ্যাত সাঁতারু ব্রজেন দাশের জš§ ১৯২৭ সালের ৯ ডিসেম্বর। তার বাবার নাম হরেন্দ্র কুমার দাস ও মা বিমলা দাস। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের পাঠশালাতেই শুরু। একটু বড় হয়ে গুরুজনদের সঙ্গে ঢাকা চলে আসেন এবং কেএল জুবিলি হাইস্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকেই ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাস করেন ১৯৪৬ সালে। পরে কলকাতায় গিয়ে বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে যথাসময়ে আইএ এবং বিএ পাস করেন। বিএ পাস করার পর ঢাকায় ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বটে, কিন্তু পরে ছেড়ে দেন।
বাল্যকাল থেকেই খেলাধুলার দিকে ঝোঁক ছিল। ফুটবল খেলা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতেন এবং স্কুল জীবনে সর্বদা স্কুল-ক্যাপ্টেন থেকেছেন। এরপর ভালো লাগতো ক্রিকেট। কিন্তু ছোটবেলায় সাঁতার কখনই তার কাছে খেলা মনে হয়নি। সাঁতার ছিল মজার বা আমাদের ব্যাপার। বুড়িগঙ্গা ছিল কাছেই। সাঁতারের আনন্দ ছিল একান্ত স্বাভাবিক। আন্তঃবিদ্যালয় খেলাধুলায় সাঁতার প্রতিযোগিতায় সবসময় প্রথম স্থান দখল করতেন। কলকাতায় কলেজ জীবনে সাঁতারের দিকে বিশেষ কারণে আগ্রহ জš§ায়, কারণ তার বাড়ির কাছাকাছি ফুটবল-ক্রিকেটাদি খেলার মাঠ ছিল না, অথচ সুইমিংপুল ছিল। সন্তরণক্রীড়ার বিজ্ঞান অর্থাৎ সাঁতারের বিভিন্ন কায়দা, নিয়মকানুন ইত্যাদি তিনি সেখানেই শেখেন। কলকাতায় ছাত্রাবস্থাতেই তিনি সাঁতারে প্রথম হতে শুরু করেন।
ঢাকায় ফিরে আসার পর এ দেশে সাঁতারের নিয়মিত অনুশীলন, বার্ষিক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি প্রধানত তারই উদ্যোগে শুরু হয় ১৯৫৩ সালে, কারণ ইস্ট পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশনকে তিনিই এ ব্যাপারে উৎসাহী ও উদ্যোগী করে তুলেছিলেন। ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান অলিম্পিকে সাঁতার প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম তো হনই, উপরন্তু সর্বমোট চারটি খেলায় উপর্যুপরি সাফল্যের কারণে স্বর্ণপদক লাভ করেন। অথচ পরের বছর ১৯৫৬ সালে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অলিম্পিকে তাকে পাঠানো হয়নি। এই অপমানজনক পরিস্থিতিই তাকে অলিম্পিকে অংশ না নিয়েও সমতুল্য সম্মান ও সাফল্য অর্জনের চিন্তায় বাধ্য করে এবং তিনি মনস্থ করেন, ইংলিশ চ্যানেল তাকে সাঁতরে অতিক্রম করতে হবেই। তাকে শক্তি জুগিয়েছিলেন ইস্ট পাকিস্তান স্পোর্টস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম মোহসীন। অতঃপর কঠিন সাধনা শুরু হয় ১২, ১৬, ২৪, ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী একটানা সাঁতারের। নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুরে সাঁতরে যান ১৯৫৮ সালের মার্চে। কিন্তু ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম প্রতিযোগিতার আগেই ১৯৫৮-এর জুলাইয়ে আরেকটি সাঁতারের আমন্ত্রণ আসে। ইতালির কাপ্রি থেকে নেপলস পর্যন্ত সাঁতার কেটে যেতে হবে। এটি কোনো প্রতিযোগিতা ছিল না। ফলে লন্ডন থেকেই তিনি ইতালি গিয়ে ওই খেলায় অংশ নেন।
ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের সাঁতার প্রতিযোগিতায় মোট ২৩টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল। সাঁতারুদের মধ্যে মেয়েও ছিলেন পাঁচজন। ভারতবর্ষীয় উপমহাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিলেন একমাত্র ব্রজেন দাশ। তিনি ছিলেন ১৯নং প্রতিযোগী। ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট প্রায় মধ্যরাতে সাঁতার শুরু হয়। ইংলিশ চ্যানেল এমনিতেই অশান্ত থাকে, সেদিন বাড়তি সুবিধা ছিল কুয়াশা। ফ্রান্সের তীর থেকে সাঁতরে ইংল্যান্ডের তীরে এসে উঠতে হবে। প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছিল পরদিন বিকাল বেলায় এবং ব্রজেন দাশ প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
১৯৬১ সালের সাঁতারে তিনি বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গ করেন। এর আগে ১০ ঘণ্টা ৫০ মিনিটের আগে কেউ চ্যানেল অতিক্রম করতে পারেননি, ব্রজেন দাশ করেছিলেন ১০ ঘণ্টা ৩৫ মিনিটে। বিখ্যাত এই সাঁতারু মারা যান ১৯৯৮ সালের ১ জুন।
COMMENTS